ঢাকা ০৮:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আপনার ভাঙা সম্পর্ক সংরক্ষণ করবে জাদুঘর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৩:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১
  • ১৪৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভালোবাসা আর বিচ্ছেদ মুদ্রার এপিট ওপিট। একটি অন্যটির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটা চিরায়ত একটি ব্যাপার হলেও বিচ্ছেদ মেনে নেয়া কঠিন। বিচ্ছেদের পর প্রাক্তনকে ভুলে যাওয়া বা তার সঙ্গে কাটানো সময় ভুলে যাওয়া আরো বেশি কঠিন। অনেকেই দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী শোক পালন করেন ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের স্মৃতি নিয়ে।

তাইতো প্রাক্তনের দেয়া উপহার কিংবা ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের স্মৃতি আঁকড়ে ধরার কোনো মানেই হয় না। আবার ফেলে দিতেও ইচ্ছা করে না। আমরা মানুষেরা বোধহয় কষ্টের স্মৃতিই বেশিদিন গচ্ছিত রাখি। তবে নিজের কাছে রাখলে কষ্ট যেহেতু বেশি হচ্ছে তাই সেগুলোকে জাদুঘরে গিয়ে রেখে আসুন না। মাঝে মাঝে গিয়ে না হয় দেখে এলেন। অন্যরাও আপনার প্রাক্তনের দেয়া উপহার, চিঠি কিংবা এসব স্মৃতির সাক্ষী হলো। অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়? কি বলছি এসব! তবে হ্যাঁ সত্যিই কিন্তু এমন জাদুঘর রয়েছে।

এই দম্পতি তাদের বিচ্ছেদের পরই এমন একটি জাদুঘর তৈরি করার আইডিয়া পান

এই দম্পতি তাদের বিচ্ছেদের পরই এমন একটি জাদুঘর তৈরি করার আইডিয়া পান

ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগ্রেব শহরে এমনই একটি জাদুঘর আছে। যেখানে সংরক্ষণ করে রাখা হয় ভেঙে যাওয়া প্রেম। বিশ্বের প্রথম এমন এক জাদুঘর তৈরি করে সবাইকে চমকে দেন এক দম্পতি। এর গল্পটা শুরু ফিল্ম প্রযোজক অলিঙ্কা ভিস্তিকা এবং ভাস্কর্যশিল্পী দ্রাজেন গ্রুবিসিকের মধ্যে যখন বিচ্ছেদ ঘটে। ২০০৩ সালে ৪ বছরের প্রেমে ইতি টানেন এ দম্পতি। এরপরই যৌথ উদ্যোগে তারা গড়ে তোলেন এমন জাদুঘর। বিচ্ছেদের কষ্ট ভুলতেই প্রথমে নিজেদের উপহারগুলো এক্সচেঞ্জ করেন। তবে কেউই সেগুলো নিতে চাচ্ছিলেন না। আবার একজন অন্যজনের উপহারগুলোও আর রাখবেন না। ফেলে দেয়া ছাড়া উপায় নেই। তবে ওগুলোর প্রতি যে মায়া পড়ে গেছে। মূলত এরপরই তাদের এমন জাদুঘরের কথা মাথায় আসে।

যে কেউ সেখানে তার প্রাক্তনের স্মৃতিচিহ্ন রেখে আসতে পারে

যে কেউ সেখানে তার প্রাক্তনের স্মৃতিচিহ্ন রেখে আসতে পারে

জাগ্রেবের প্রথম বেসরকারি জাদুঘর হিসেবে ২০১০ সালে জাদুঘরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়। ভাঙা প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্যোগে কাজ করছে এক জাদুঘর। এ জাদুঘরের বৈশিষ্ট্য হলো, প্রাক্তনের বিভিন্ন স্মৃতি সংরক্ষণ করে রাখা যায় এখানে। যেমন- আপনার প্রাক্তনের দেয়া কোনো উপহার বা তার কোনো ব্যবহৃত জিনিস আপনি জাদুঘরে রেখে দিতে পারেন।

এখানে রাখা আছে বিভিন্ন মানুষের রেখে যাওয়া চিঠি, পোশাক, ব্যবহার্য নানা জিনিস

এখানে রাখা আছে বিভিন্ন মানুষের রেখে যাওয়া চিঠি, পোশাক, ব্যবহার্য নানা জিনিস

জাদুঘরে গেলে আপনি দেখতে পাবেন, কারো প্রিয়জনের লেখা চিঠি, তার ব্যবহৃত পোশাকসহ জুতা, বিভিন্ন উপহার থরে থরে সাজানো। অনেক মানুষ তাদের ভালোবাসার মানুষের স্মৃতিটুকু জাদুঘরে রেখে গেছেন। সব জিনিসের পাশেই ছোট্ট একটি নোট লেখা আছে। সেখানে হয়ত প্রাক্তনকে নিয়ে স্মরণীয় কোনো ঘটনা লিখে রেখে গেছেন সঙ্গী। দর্শনার্থীরা জাদুঘরে গিয়ে অন্যের ভেঙে যাওয়া প্রেমের স্মৃতি দেখেন এবং কাহিনী পড়েন।

দর্শনার্থীরা জাদুঘরে গিয়ে অন্যের ভেঙে যাওয়া প্রেমের স্মৃতি দেখেন এবং কাহিনী পড়েন

দর্শনার্থীরা জাদুঘরে গিয়ে অন্যের ভেঙে যাওয়া প্রেমের স্মৃতি দেখেন এবং কাহিনী পড়েন

ভিন্ন আকৃতিতে গড়ে তোলা জাদুঘরটি দেখতে অন্য সব জাদুঘরের থেকে আলাদা। এর ভেতরের পরিবেশ বেশ শান্ত। ভেতরে গিয়ে কারো চিঠি পড়তে পড়তে নিজের পুরনো প্রেমকে খুঁজে পেতে পারেন। এও শান্ত পরিবেশ আপনার পুরো মনোযোগ ধরে রাখবে এসব স্মৃতিচারণে। অনেকটা প্রশস্ত হওয়ায় একসঙ্গে দর্শনার্থীরাও ঘুরে ঘুরে জাদুঘরটি দেখতে পারেন।

থরে থরে সাজানো মানুষের ভালোবাসার স্মৃতি

থরে থরে সাজানো মানুষের ভালোবাসার স্মৃতি

২০১০ সালের পর থেকেই ‘মিউজিয়াম অব ব্রোকেন রিলেশনশিপ’ দর্শনীয় এক স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বছরের বিভিন্ন সময় সেখানে পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়। দর্শনার্থীরা জাদুঘরে ঘুরতে এসেও নিজেদের পুরনো প্রেমকে মনে করেন। আবার কেউ সঙ্গে নিয়ে যান প্রাক্তনের স্মৃতি। রেখে আসেন এ জাদুঘরে। আপনিও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন, ভিন্নধর্মী এ জাদুঘর থেকে।

যে কেউ চাইলেই সেখানে নিজের কিছু রেখে আসতে পারে, সঙ্গে লিখতে পারে কিছু নোট

যে কেউ চাইলেই সেখানে নিজের কিছু রেখে আসতে পারে, সঙ্গে লিখতে পারে কিছু নোট

সম্পর্ক ভেঙে গেলেও ভালোবাসা মন থেকে মুছে যায় না। এ কারণেই পুরোনো প্রেমকে বাঁচিয়ে রাখতে অলিঙ্কা ভিস্তিকা এবং দ্রাজেন গ্রুবিসিকের উদ্যোগে তৈরি জাদুঘরে এসে স্মৃতি রেখে যান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আপনার ভাঙা সম্পর্ক সংরক্ষণ করবে জাদুঘর

আপডেট টাইম : ০৩:০৩:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভালোবাসা আর বিচ্ছেদ মুদ্রার এপিট ওপিট। একটি অন্যটির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটা চিরায়ত একটি ব্যাপার হলেও বিচ্ছেদ মেনে নেয়া কঠিন। বিচ্ছেদের পর প্রাক্তনকে ভুলে যাওয়া বা তার সঙ্গে কাটানো সময় ভুলে যাওয়া আরো বেশি কঠিন। অনেকেই দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী শোক পালন করেন ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের স্মৃতি নিয়ে।

তাইতো প্রাক্তনের দেয়া উপহার কিংবা ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের স্মৃতি আঁকড়ে ধরার কোনো মানেই হয় না। আবার ফেলে দিতেও ইচ্ছা করে না। আমরা মানুষেরা বোধহয় কষ্টের স্মৃতিই বেশিদিন গচ্ছিত রাখি। তবে নিজের কাছে রাখলে কষ্ট যেহেতু বেশি হচ্ছে তাই সেগুলোকে জাদুঘরে গিয়ে রেখে আসুন না। মাঝে মাঝে গিয়ে না হয় দেখে এলেন। অন্যরাও আপনার প্রাক্তনের দেয়া উপহার, চিঠি কিংবা এসব স্মৃতির সাক্ষী হলো। অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়? কি বলছি এসব! তবে হ্যাঁ সত্যিই কিন্তু এমন জাদুঘর রয়েছে।

এই দম্পতি তাদের বিচ্ছেদের পরই এমন একটি জাদুঘর তৈরি করার আইডিয়া পান

এই দম্পতি তাদের বিচ্ছেদের পরই এমন একটি জাদুঘর তৈরি করার আইডিয়া পান

ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগ্রেব শহরে এমনই একটি জাদুঘর আছে। যেখানে সংরক্ষণ করে রাখা হয় ভেঙে যাওয়া প্রেম। বিশ্বের প্রথম এমন এক জাদুঘর তৈরি করে সবাইকে চমকে দেন এক দম্পতি। এর গল্পটা শুরু ফিল্ম প্রযোজক অলিঙ্কা ভিস্তিকা এবং ভাস্কর্যশিল্পী দ্রাজেন গ্রুবিসিকের মধ্যে যখন বিচ্ছেদ ঘটে। ২০০৩ সালে ৪ বছরের প্রেমে ইতি টানেন এ দম্পতি। এরপরই যৌথ উদ্যোগে তারা গড়ে তোলেন এমন জাদুঘর। বিচ্ছেদের কষ্ট ভুলতেই প্রথমে নিজেদের উপহারগুলো এক্সচেঞ্জ করেন। তবে কেউই সেগুলো নিতে চাচ্ছিলেন না। আবার একজন অন্যজনের উপহারগুলোও আর রাখবেন না। ফেলে দেয়া ছাড়া উপায় নেই। তবে ওগুলোর প্রতি যে মায়া পড়ে গেছে। মূলত এরপরই তাদের এমন জাদুঘরের কথা মাথায় আসে।

যে কেউ সেখানে তার প্রাক্তনের স্মৃতিচিহ্ন রেখে আসতে পারে

যে কেউ সেখানে তার প্রাক্তনের স্মৃতিচিহ্ন রেখে আসতে পারে

জাগ্রেবের প্রথম বেসরকারি জাদুঘর হিসেবে ২০১০ সালে জাদুঘরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়। ভাঙা প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্যোগে কাজ করছে এক জাদুঘর। এ জাদুঘরের বৈশিষ্ট্য হলো, প্রাক্তনের বিভিন্ন স্মৃতি সংরক্ষণ করে রাখা যায় এখানে। যেমন- আপনার প্রাক্তনের দেয়া কোনো উপহার বা তার কোনো ব্যবহৃত জিনিস আপনি জাদুঘরে রেখে দিতে পারেন।

এখানে রাখা আছে বিভিন্ন মানুষের রেখে যাওয়া চিঠি, পোশাক, ব্যবহার্য নানা জিনিস

এখানে রাখা আছে বিভিন্ন মানুষের রেখে যাওয়া চিঠি, পোশাক, ব্যবহার্য নানা জিনিস

জাদুঘরে গেলে আপনি দেখতে পাবেন, কারো প্রিয়জনের লেখা চিঠি, তার ব্যবহৃত পোশাকসহ জুতা, বিভিন্ন উপহার থরে থরে সাজানো। অনেক মানুষ তাদের ভালোবাসার মানুষের স্মৃতিটুকু জাদুঘরে রেখে গেছেন। সব জিনিসের পাশেই ছোট্ট একটি নোট লেখা আছে। সেখানে হয়ত প্রাক্তনকে নিয়ে স্মরণীয় কোনো ঘটনা লিখে রেখে গেছেন সঙ্গী। দর্শনার্থীরা জাদুঘরে গিয়ে অন্যের ভেঙে যাওয়া প্রেমের স্মৃতি দেখেন এবং কাহিনী পড়েন।

দর্শনার্থীরা জাদুঘরে গিয়ে অন্যের ভেঙে যাওয়া প্রেমের স্মৃতি দেখেন এবং কাহিনী পড়েন

দর্শনার্থীরা জাদুঘরে গিয়ে অন্যের ভেঙে যাওয়া প্রেমের স্মৃতি দেখেন এবং কাহিনী পড়েন

ভিন্ন আকৃতিতে গড়ে তোলা জাদুঘরটি দেখতে অন্য সব জাদুঘরের থেকে আলাদা। এর ভেতরের পরিবেশ বেশ শান্ত। ভেতরে গিয়ে কারো চিঠি পড়তে পড়তে নিজের পুরনো প্রেমকে খুঁজে পেতে পারেন। এও শান্ত পরিবেশ আপনার পুরো মনোযোগ ধরে রাখবে এসব স্মৃতিচারণে। অনেকটা প্রশস্ত হওয়ায় একসঙ্গে দর্শনার্থীরাও ঘুরে ঘুরে জাদুঘরটি দেখতে পারেন।

থরে থরে সাজানো মানুষের ভালোবাসার স্মৃতি

থরে থরে সাজানো মানুষের ভালোবাসার স্মৃতি

২০১০ সালের পর থেকেই ‘মিউজিয়াম অব ব্রোকেন রিলেশনশিপ’ দর্শনীয় এক স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বছরের বিভিন্ন সময় সেখানে পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়। দর্শনার্থীরা জাদুঘরে ঘুরতে এসেও নিজেদের পুরনো প্রেমকে মনে করেন। আবার কেউ সঙ্গে নিয়ে যান প্রাক্তনের স্মৃতি। রেখে আসেন এ জাদুঘরে। আপনিও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন, ভিন্নধর্মী এ জাদুঘর থেকে।

যে কেউ চাইলেই সেখানে নিজের কিছু রেখে আসতে পারে, সঙ্গে লিখতে পারে কিছু নোট

যে কেউ চাইলেই সেখানে নিজের কিছু রেখে আসতে পারে, সঙ্গে লিখতে পারে কিছু নোট

সম্পর্ক ভেঙে গেলেও ভালোবাসা মন থেকে মুছে যায় না। এ কারণেই পুরোনো প্রেমকে বাঁচিয়ে রাখতে অলিঙ্কা ভিস্তিকা এবং দ্রাজেন গ্রুবিসিকের উদ্যোগে তৈরি জাদুঘরে এসে স্মৃতি রেখে যান।